32-Bit নাকি 64-Bit কোনটা ভালো ?


32-Bit নাকি64-Bit কোনটা ভালো?


এখনকার যুগে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন, যার একটা পার্সোনাল কম্পিউটার বা ল্যাপটপ নেই। কেউ ব্যবহার করে স্টাডি পারপাসে,   কেউ ব্যবহার করে কাজের জন্য, কেউ ব্যবহার করে ছোটখাটো ব্যবসার কজে যেমন- গান লোড করা, যাদের স্টুডিও আছে তাদের ছবি ইডিটিং এর প্রয়োজন হয়,  আবার কেউ শখের বসে । 

এরকম নানান কাজে আশা করা যায় প্রায় ৮০% মানুষের কাছেই একটা করে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ আছে।


কম্পিউটার তো অনেকেই ব্যবহার করে, কিন্তু একটা জিনিস নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন এ পড়তে হয় যে, সে তার কম্পিউটারে 32-Bit নাকি 64-Bit কোন অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করবে? তার কম্পিউটারের জন্য কোনটা ভালো হবে? তাই আজকের বিষয়বস্তু এটা। আশা করছি এই আর্টিকেলটি পড়ার পরে কারো মনে আর কোন কনফিউশন থাকবেনা।

আসলে 32- Bit  আর  64-Bit সম্পর্কে জানতে হলে আগে একটা বিষয় ক্লিয়ার  করতে হবে। সেটা হচ্ছে 32- Bit  আর  64-Bit এর সাথে আরেকটা নাম্বার আপনারা দেখে থাকবেন যেটা হলো- x86. x86 আর 32-Bit এই দুটি জিনিস সেইম, সো আমরা এই দুইটাকে এক সাথে রাখছি (x86=32-Bit).  আর হচ্ছে 64-Bit, তো এই দুইটাকে আমরা এক্সপ্লেইন করবো।


32-Bit এবং 64-Bit এই দুইটা প্রসেসরকে এভাবে ডিভাইট করার কারণ হলো- মেমোরি এড্রেসিং পাওয়ার (Memory Addressing Powe). 32-Bit এর মেমোরি এড্রেসিং পাওয়ারের এমাউন্ট টা একটু কম, আর 64-Bit এর টা অনেক বেশি।


 যদি আমরা এই জিনিসটাবুঝতে যাই যে, মেমোরিএড্রেসিং পাওয়ারটা আসলে কি? সেটাহলো- একটা কম্পিউটারের প্রসেসরযখন কাজ করে (কোনএকটা ডাটা প্রসেস করে)তখন সেই ডাটাগুলোকে টেম্পরারেলিরাখতে হয় কোথাও, আর সে জন্যই দরকার হয় রেম। সো এই টেম্পরারেলি ডাটা রেমে রাখা হয়। এখন 32-Bit অপারেটিং সিস্টেমের যে প্রসেসর গুলো আছে সেটাতে মেমোরি এড্রেসিং পাওয়ারটা লো হয় আর 64-Bit অনেক হাই হয়।


চলুন এখন একটু হিসেব করে নেই যে, 32-Bit একত হবে এবং 64-Bit এ কত হবে। সেই হিসাবটা করার জন্য আমরা একদম ছোট থেকে শুরু করি।

1-Bit এর একটা প্রসেসর যদি আমরা ধরি তাহলে 1-Bit প্রসেসরে দুইটা মেমোরি লোকেশন থাকবে। এবং সেই বিট টা যদি বাড়ে 2-Bit যদি হয় তাহলে সেই লোকেশনটা ডাবল হয়ে যাবে। সো 1-Bit প্রসেসরে দুইটা মেমোরি লোকেশন থাকবে এবং 2-Bit প্রসেসরে হবে চারটা মেমোরি লোকেশন। সেখানে যদি আমরা যাই আবার 3-Bit , 3-Bit এর প্রসেসর যদি হয় তাহলে মেমোরি লোকেশন হবে আট। মানে হলো যে বিট থাকবে সেই বিট দুইয়ের উপরে পাওয়ার হিসাবে এড করে দিব।

2^1-Bit = 2
2^2-Bit = 4
2^3-Bit = 8
2^4-Bit = 16
2^5-Bit = 32
এভাবে যদি আমরা 32-Bit পর্যন্ত যাই তাহলে 32-Bit  প্রসেসর মানে হচ্ছে-
এখানে যে এমাউন্ট টা আছে সেটা হচ্ছে- ফোর বিলিয়ন এর থেকে কিছুটা বেশি।


এখন এই ফোর বিলিয়নকে যদি আমরা গিগাবাইট এ কনভার্ট করি তাহলে সেটা আসে চার গিগাবাইট মানে (৪ জিবি). তার মানে হলো 32-Bit প্রসেসরে চার জিবি পর্যন্ত রেম সাপোর্ট করবে বা করে আরকি। চার জিবির উপরে যদি আপনি 32-Bit এর কোন অপারেটিং সিস্টেমে এড করেন, তাহলে সে রেমটা কাজ করবেনা বা সাপোর্ট করবেনা। মোট কথা হলো 32-Bit কোন অপারেটিং সিস্টেম কিংবা প্রসেসরের মধ্যে শুধুমাত্র চার জিবি পর্যন্ত রেম ব্যবহার করা যাবে এর থেকে বেশি করা যাবেনা।


এবার আসা যাক  64-Bit  অপারেটিং সিস্টেম।64-Bit এর কথা যদি বলিএবং এটার নাম্বারটা যদি আমরা আগের মত কনভার্ট করি তাহলে দেখুন কি হয়।


আরে বাবা! নাম্বারটা আসলে আমার  পক্ষে  বলাটা মুশকিল আপনারা যদি পারেন তাহলে ভালো। আর এই নাম্বারটাকে যদি আমরা গিগাবাইট এ কনভার্ট করি তাহলেও দেখা যাবে অনেক বড় হায়ে যাবে, তাই এটাকে আমরা এক্সাবাইট এ কনভার্ট করবো।  এক্সাবাইট এ যদি কনভার্ট করি তাহলে উপরের নাম্বারের হিসেবে হবে ১৬ এক্সাবাইট (16 Exabyte). আর ১৬ এক্সাবাইট সমান রেম হবে-16 EB = 17179869184 GB.


 তার মানে হিউজ একটা নাম্বার। এই ১৬ এক্সাবাইট রেম ব্যবহার করতে পারবে 64-Bit অপারেটিং সিস্টেম কিংবা প্রসেসরে। তো এত বড় রেম এখনো আবিষ্কার হয়নি, আর কবে হবে সেটা আমরা দেখতে পারবো কিনা হয়তো আমাদের নাতি পুতিরাও দেখতে পারবেনা। তবে হ্যা, টেকনোলজি যেভাবে ফাস্ট গ্রোও করছে হয়তো আমরা দেখতেও পারি।


তাহলে এখন মোটা কথা হলো 32-Bit প্রসেসরে আমরা ৪ জিবি পর্যন্ত রেম ব্যবহার করতে পারবো, আর 64-Bit প্রসেসরে ৪ জিবি থেকে বেশি যত আছে এখন পর্যন্ত মার্কেটে সবটুকু ব্যবহার যাবে।


আচ্ছা তো এখন আরেকটা জিনিস আরেকটু ক্লিয়ার করি তাহলে আপনারা আরেকটু ভালো ধারনা পাবেন। আসলে  64-Bit এর অপারেটিং সিস্টেমে এখন লেটেস্ট যে সফটওয়্যার গুলো রিলিজ হচ্ছে- গেম এবং নতুন যে বড় বড় সফটওয়্যার যেমন এডোবির যে প্রোডাক্ট গুলো, মানে লেটেস্ট যে সফটওয়্যার গুলো রিলিজ হচ্ছে সেগুলো  64-Bit রিকোয়ারমেন্ট করে, যে আপনার 64-Bit অপারেটিং সিস্টেম লাগবে। কারণ হচ্ছে, 64-Bit এর রেম বেশি আর  32-Bit এর রেম কম। এবং সেগুলো হলো ওল্ড জেনারেশন এর কম্পিউটার গুলো, যেখানে 32-Bit  অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।


এখন আপনার কম্পিউটার যদি ৪ জিবির কম হয় রেম, তাহলে আমি বলবো আপনি 32-Bit  অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করবেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, আপনার রেম যদি ৪ জিবির কম হয় তাহলে আপনি 64-Bit ব্যবহার করতে পারবেন কিনা? হ্যা, আপনার রেম যদি ৪ জিবির কম হয় তবুও আপনি 64-Bit অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবেন, এবং  64-Bit এর যে সফটওয়্যার গুলো আছে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু পারফরমেন্স টা লো হবে, এটা আমি নিজেও ব্যবহারকরে দেখেছি।


একটা বড় সফটওয়্যার ইন্সটল করার আগেই যখন আপনাকে বলে দেয় যে, আপনাকে 64-Bit প্রসেসর কিংবা অপারেটিং সিস্টেম ওয়ালা উইন্ডোজ এ ব্যবহার করতে হবে। তখন সেটাকে যদি আপনি  32-Bit প্রসেসরের যে হার্ডওয়্যার আছে, সেখানে 64-Bit  অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করে সেই সফটওয়্যারযদি সেখানে ইন্সটল করেন, তাহলে সফটওয়্যারের যে রিকোয়ারমেন্ট টা সেটা কিন্তু ফুলফিল হলো না।


ধরুন "এডোবি আফটার ইফেক্টস" এটার রিকোয়ারমেন্টস যদি ৬ জিবি রেম হয়, আর আপনি যদি  32-Bit  অপারেটিং সিস্টেম কিংবা প্রসেসরে  64-Bit  অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করে যদি ঐ "এডোবি আফটার ইফেক্টস" রান করান, তাহলে অবশ্যই সেটা স্লো হবে এবং অনেক বেশি স্লো কাজ করবে। এবং কাজ করতে গিয়ে প্রচন্ড ঝামেলা হবে।


আর 32-Bit এবং 64-Bit এর মধ্যে মেইন ডিফারেন্টস টা আসলে এটাই যে,  32-Bit এ ৪ জিবি পর্যন্ত রেম ব্যবহার করা যাবে, এবং 64-Bit এ ৪ জিবির উপরে যতটুকু আছে একদম ১৬ এক্সাবাইট পর্যন্ত রেম ব্যবহার করা যাবে। তো আশা করি32-Bit এবং 64-Bit এর মধ্যে পার্থক্যটাআপনাদেরকে ক্লিয়ার ভাবে বোঝাতে পেরেছি। 



R @ S. Theme images by PLAINVIEW. Powered by Blogger.