ক্যারিয়ার টিপস -১

ক্যারিয়ার টিপস -১ 

জব সিকারদের তুলনায় যে জব মার্কেট (job market) এ জবের পরিমান কম, তা আমরা সবাই জানি। হয়ত সেকারনেই আজকাল চাকরীদাতাদের কমন চাহিদা ভালো রেজাল্ট (good result/grade), অনেক সময় ভালো ভার্সিটির (renound universities) ভালো রেজাল্ট, ছেলে ইয়াং-এনার্জেটিক হতে হবে আবার অভিজ্ঞতা (experience) ও চায়। অনভিজ্ঞ একজন জব সিকারের পক্ষে এই কম্পিটিটিভ জব মার্কেটে স্রেফ আল্লাহর ওয়াস্তে কিংবা নিজের ন্যাচারাল ট্যালেন্ট দিয়ে জব ম্যানেজ করা সত্যি অসম্ভব। তাই এই চাকুরির যুদ্ধে জয়ী হবার জন্য নিজের সিভি (CV- Curriculum vitae) তৈরি করা,উপযুক্ত জব খুঁজে বের করা (job search), আর ইন্টারভিউ (interview) তে ভালো করা চাই, আর সেজন্য চাই নিখুঁত পরিকল্পনা আর কঠোর বাস্তবায়ন। কিভাবে একজন জব সিকার নিজেকে চাকুরি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করবে তা নিয়ে আমরা আবশ্যই ধাপে ধাপে আলোচনা করব। কিন্তু তার আগে আমরা জানব এমপ্লয়ার (employer) বা চাকরি দাতারা আসলে কী চান তাদের একজন এমপ্লয়ির (employee) কাছে।




এমপ্লয়িদের কাছে এমপ্লয়ারদের প্রত্যাশাঃ


এমপ্লয়াররা তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য কর্মী নির্বাচন আর ইন্টারভিউয়ের সময় জব সিকারদের মাঝে নির্দিষ্ট কিছু স্কিল (skills) তালাশ করেন। স্কিল দুই কিসিমের; হার্ড স্কিল (hard skills) আর সফট স্কিল (soft skills)। হার্ড স্কিল মানে যেসব স্কিল আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিখে আসি আর যেসব স্কিলে আপনার পারদর্শীতা মাপা যায়। যেমনঃ আপনার টাইপিং স্পিড। এটা আপনি যেকোন কোচিং সেন্টারে বসে শিখতে পারেন আর কোর্স শেষে আপনার সার্টিফিকেটেই লেখা থাকে মিনিটে আপনার বাংলা আর ইংলিশ টাইপিং স্পিড কত। পক্ষান্তরে, সফট স্কিল আসলে অভ্যাস আর অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে গড়ে উঠা আপনার সামর্থ্য। যেমনঃ লিডারশীপ, টিম ওয়ার্ক, প্রব্লেম সল্ভিং স্কিল ইত্যাদি। এই দুই কিসিমের স্কিলের সমন্বয়েই একেক প্রতিষ্ঠানের একেক পদের জন্য একেক ধরনের স্কিল্ড এমপ্লোয়ি খোঁজা হয়ে থাকে। যাহোক, স্পেসিফিক জবের জন্য কিছু স্পেসিফিক স্কিল মাস্ট হলেও ছোট আর বড় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই কিছু কমন স্কিলের উপর গুরুত্ব দেয়া হয় আর সেসব স্কিলে সুদক্ষদেরই অগ্রাধিকার দেয়া হয়ে থাকে।

তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক সেই সব কমন স্কিল গুলো কি কিঃ

১। কম্যুনিকেশন স্কিলঃ আপনি নিজের মতামত কিংবা অফিসের বক্তব্য প্রকাশে আপনার মৌখিক আর লিখিত দক্ষতাকেই মূলত কম্যুনিকেশন স্কিল (communication skill) বলে। যেকোন অফিসই আসলে ছোট বড় টিম (team) দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই আপনার কম্যুনিকেশন স্কিলে উইকনেস থাকলে আপনি নিজে শুধু না বরং আপনার পুরো টিমই সাফার করে আর পিছিয়ে পরে।
২। টিম ওয়ার্কঃ আগেই বলেছি সব অফিসই আসলে ছোট বড় টিমের কর্মক্ষেত্র (work place) মাত্র। তাই একজন টিম মেন (team guy/team man) হিসেবে আপনি কেমন পারফর্ম করবেন তা জানা খুব জরুরী। যে যত প্রতিভাবানই হোকনা কেন, সে যদি একজন টিম মেট (team mate) হিসেবে কাজ করে অভ্যস্ত না হয়, তাহলে সে খুব দ্রুতই আলাদা আর একা হয়ে যায়। এতে তার প্রোডাক্টিভিটিও (productivity) কমে যায় ফলে সার্বিকভাবে অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৩। বিশ্লেষন ক্ষমতাঃ এনালেটিক্যাল স্কিল (analytical skill) বা বিশ্লেষন ক্ষমতা বেশ দামি গুন। এই স্কিল না থাকলে একজন এমপ্লয়ি তার কোম্পানীর সার্বিক কার্যক্রম সঠিকভাবে অনুধাবন করতে ব্যর্থ হন। তাছাড়া জটিল সমস্যার উদ্ভাবনী (innovative) আর কার্যকর সমাধান নির্নয়েও তিনি ব্যর্থ হন।
৪। আইটি স্কিলঃ আজকাল আইটি দক্ষতা (IT Skill) ছাড়া যেকোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়া অসম্ভব প্রায়। ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্টের মত বেসিক আইটি স্কিল তো বটেই অনেক ক্ষেত্রেই এমপ্লয়াররা তাদের কাছে আসা জব সিকারদের মাঝে আরো বেশি আইটি দক্ষতা খোঁজেন। তাই অন্তত ১ম বা ২য় চাকরির ক্ষেত্রে চাকরির ধরন অনুযায়ী একজন জব সিকারের আইটি সংক্রান্ত ব্যাপারে উপযুক্ত দক্ষতা থাকাটা প্রায় আবশ্যক।
৫। ক্রিয়েটিভিটিঃ নিজ কাজে দক্ষ, সেই সাথে ক্রিয়েটিভ (creative/creativity) লোকদের কে না ভালবাসে? এমপ্লয়াররাও তেমন এমপ্লয়িদেরই বেশি পছন্দ করেন যারা কোম্পানীর ব্যয় কমাতে কিংবা লাভ বাড়াতে সৃজনশীল আর উদ্ভাবনী সব আইডিয়া দেবার চেষ্টা করে।
৬। গানিতিক দক্ষতাঃ নিউমেরাসি স্কিল (numeracy skill) বা গানিতিক দক্ষতা এমন এক দক্ষতা যা নিজের কাজের ব্যাপারে আপনাকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখে। বিশেষত কর্পোরেট ক্যারিয়ারের (corporate career) সিঁড়ি বেয়ে একজন এমপ্লয়ি যত উপরের দিকে উঠে এই নিউমেরাসি স্কিল তাকে তত বেশি এডভান্টেজ দিতে থাকে।
৭। এথিকসঃ মেধার পাশাপাশি সৎ এবং পরিশ্রমি একজন এমপ্লয়ি, যিনি গ্রহনযোগ্য এথিক্যাল ভ্যালু (ethics/ethical values) বা নৈতিক মূল্যবোধ লালন করেন, তিনি যেকোন প্রতিষ্ঠানেরই সম্পদ ও গর্ব। তাই যেকোনো এমপ্লয়ারই এমন এমপ্লয়ি রিক্রুট (recruit) কিংবা হায়ার (hire) করতে উদ্গ্রিব হয়ে থাকে।
আপনার ভেতর উপরের স্কিল গুলোর সব কিংবা বেশিরভাগই হয়ত আছে। কিন্তু সেটা কি আপনার এমপ্লয়ার জেনে বসে আছেন? না। তারমানে আপনাকে উপস্থাপন করতে হবে যে, তাদের প্রত্যাশিত স্কিল গুলোর সব কয়টাই আপনার মধ্যে আছে। আর এই উপস্থাপনের প্রধান উপায় হলো আপনার বায়োডাটা/রিজ্যুমি/সিভি (biodate/resume/CV)। চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়ার শুরুতেই আপনাকে এই সিভি বা কারিকুলাম ভাইটা মেইলে, কুরিয়ারে কিংবা ডাকে চাকরি দাতার অফিসে পাঠাতে হয়। সেখানে একজন রিক্রুটার (recruiter/HR officer) আপনার সিভি দেখে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হবার চেষ্টা করে যে আপনার ভেতর তাদের প্রত্যাশিত স্কিল গুলো আছে কি নেই। যদি থাকে, তাহলে আপনিও ইন্টারভিউ এর ডাক পাবেন, আর না থাকলে পাবেন না।
আপনার ভেতর হয়ত সত্যি সেই প্রত্যাশিত স্কিল্গুলো আছে কিন্তু আপনি কি নিশ্চিত যে আপনার সিভি পড়ে একজন রিক্রুটার তা সহজেই বুঝতে পারছেন? মানে, আপনার সিভি কি কথা বলে?

পরের কিস্তিতে আমরা শিখব কিভাবে দারুণ করে সিভি বানাতে হয়
Rashed ICT- র সাথেই থাকুন .....................
সংগ্রহিত লেখাটির লিংক: http://bit.ly/2SnLIdw
R @ S. Theme images by PLAINVIEW. Powered by Blogger.